আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত বলেছে, ট্রাম্পের পদক্ষেপ এই আদালতের স্বাধীন ও পক্ষপাতহীন বিচারকাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা।
Published : 07 Feb 2025, 07:46 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি)। সদস্য দেশগুলোকে এই নিষেধাজ্ঞা রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আইসিসি বলেছে, “ট্রাম্পের পদক্ষেপ এই আদালতের স্বাধীন ও পক্ষপাতহীন বিচারকাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করারই চেষ্টা।”
মিত্র ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জেরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) ওপর বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প।
তার সই করা নির্বাহী আদেশে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আদালতটি যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বেআইনি ও ভিত্তিহীন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফরকালে ট্রাম্প এ আদেশ সই করেন। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে আমেরিকান নাগরিক বা তাদের মিত্রদের নিয়ে আইসিসির তদন্তে সহযোগিতা করা ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ হবে।
বিবিসি জানায়, আইসিসি ট্রাম্পের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে আদালতের স্টাফদের পাশে থাকা এবং বিচারকাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। আদালতটি এক বিবৃতিতে বলেছে, “আইসিসি বিশ্বজুড়ে নির্মমতার শিকার লাখো নিরপরাধ মানুষকে ন্যায়বিচার দিয়ে যাবে এবং আশা জোগাবে।”
“আমরা আমাদের ১২৫ টি সদস্যরাষ্ট্রকে, নাগরিক সমাজকে এবং বিশ্বের সব দেশকে ন্যায়বিচার ও মৌলিক মানবাধিকারের জন্য একজোট হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি,” বলা হয় বিবৃতিতে।
যুগোস্লাভিয়ার পতন ও রুয়ান্ডা গণহত্যার প্রেক্ষাপটে, নিপীড়ন-নির্যাতন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ২০০২ সালে আইসিসির যাত্রা শুরু হয়। গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গতবছর নভেম্বরে হেগভিত্তিক এ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
এর আগে ইউক্রেইনে যুদ্ধাপরাধ করার জন্য আইসিসি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের ওপর নিপীড়ন চালানোর জন্য তালেবান নেতারা এবং মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপরাধ করার জন্য দেশটির সামরিক নেতারাও আইসিসি-এর পরোয়ানার মুখে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়। তবে যুক্তরাজ্য ও বহু ইউরোপীয় দেশসহ ১২০ টির বেশি দেশ আন্তর্জাতিক এই আদালতের সদস্য।