স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, আমিরাতে তৃতীয় বৃহত্তম অভিবাসী জনগোষ্ঠী বাংলাদেশিদের মধ্যেই অবৈধ থাকার হার বেশি।
Published : 04 Feb 2025, 02:00 PM
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকার ঘোষিত অ্যামনেস্টি বা সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষে ফের শুরু হয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়, আটক হচ্ছেন বাংলাদেশিরাও।
গত ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চলমান ধরপাকড়ে ৬ হাজারেরও বেশি ভিসা লঙ্ঘনকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন। ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষ ২৭০টি তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে।
সোমবার ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি সিটিজেনশিপ কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটি (আইসিপি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহাইল সাঈদ আল খাইলি স্থানীয় গণমাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আমরা জনগণকে পরামর্শ দিচ্ছি যেন কোন ধরনের ভিসা লঙ্ঘনকে আপনারা হালকাভাবে না নেন।”
গত বছর পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সাধারণ ক্ষমা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নির্ধারিত থাকলেও দুই মাসের জন্য বাড়ানো হয়। এ সময়সীমার মধ্যে কর্তৃপক্ষ অবৈধ অভিবাসীদের ভিসা অ্যামনেস্টি গ্রহণ করে বিনা জেল জরিমানায় নিজেদের অবস্থান বৈধকরণ কিংবা দেশত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিল।
তবে এবার মাত্র ৫০ হাজার বাংলাদেশি তাদের অবস্থান বৈধ করেছেন। এর পাশাপাশি প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি ট্রাভেল পারমিট নিয়ে দেশে ফিরে গেছেন। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, আমিরাতে তৃতীয় বৃহত্তম অভিবাসী জনগোষ্ঠী বাংলাদেশিদের মধ্যেই অবৈধ থাকার হার বেশি।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আবুধাবি প্রবাসী কমিউনিটি নেতা ইফতেখার হোসেন বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানোর পরও আমরা যারা জেনেশুনে সরকারের সুযোগকে অবজ্ঞা করলাম এবং যে পরিণতি ডেকে আনলাম তার জন্য না দুই দেশের সরকার দায়ী নয়। আমরা যখন একটি দেশে থাকি তখন সে দেশের আইন-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেই হবে।”
আমিরাত কর্তৃপক্ষ তাদের যৌথ অভিযান চালাচ্ছে বিশেষ করে শ্রমঘন প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকায়— নির্মাণ সাইট, শ্রমিক আবাসন ও জনসমাগমস্থলে। ধরপাকড় হচ্ছে জেবল আলী, সোনাপুর ও আল কুস এলাকার শ্রমিক পল্লীতে। এছাড়া নাইফ, নাখিল ও মুতিনা এলাকায়ও অভিযান চলছে।
প্রবাসীরা জানান, ধৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন। তাছাড়া অবৈধ অভিবাসীদেরকে কেউ কর্মসংস্থান করলে সে কোম্পানি বা ব্যক্তির উপর মোটা অঙ্কের অর্থদণ্ডের বিধান রেখেছে সরকার।
আবুধাবি প্রবাসী ব্যাংক কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, “অনেক বাংলাদেশি সঠিকভাবে না বোঝার কারণে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেননি। এখন ধরপাকড়ের শিকার হলে ভবিষ্যতে এজন্য তাকে মূল্য দিতে হবে। অবৈধ অবস্থায় ধরা পড়লে সারা জীবনের জন্য আমিরাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ হতে পারে।”