অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে কারখানায় তালা দিয়ে সটকে পড়েন মালিকরা।
Published : 13 Nov 2024, 06:41 PM
সব কাঁচাবাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে রাজধানীর চকবাজারে পলিথিনের চারটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার সকালে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে চকবাজারের কামালবাগের ওই কারখানাগুলোতে তালা দিয়ে সটকে পড়েন মালিকরা। পরে তালা ভেঙে পলিথিন তৈরির বিপুল কাঁচামাল উদ্ধার করা হয়।সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব অভিযানে মন্ত্রণালয়ের ওই দলকে সহযোগিতা করে।
কামালবাগ এলাকায় তিন তলা একটা ভবনে মোট চারটি কারখানায় পলিথিন উৎপাদন হত। কারখানাগুলো থেকে আনুমানিক দুই হাজার ৪৬০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কারখানাগুলো সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে থাকা কর্মকর্তারা বলেন, এর আগে তারা পাইকারি পলিথিন বিক্রেতাদের দোকানে অভিযান পরিচালনা করেছেন। এখন সরসরি উৎপাদকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব বেগম রুবিনা ফেরদৌসী বলেন, “আপনারা জানেন যে, চকবাজারে পলিথিন উৎপাদনকারীদের মেইন কারখানা। আমরা যে বিল্ডিং থেকে শুরু করি, পুরোটাই একটা গোডাউনের মত ছিল। আর তারা আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে তালা দিয়ে সরে পড়ে।
“এরপর আমরা তালা ভেঙে কারখানাগুলোর ভেতরে প্রবেশ করি। তখন পলিথিন ও পলিথিন তৈরির কাঁচামাল যা যা পেয়েছি সবগুলোই আমরা জব্দ করি। আর সেগুলোতে সিলগালা ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। আজ মোট চারটা কারখানা বন্ধ করেছি।”
কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমরা মোবাইল কোর্টের যে কাজ, সেটা করে আসছি। এরপর আইন অনুযায়ী মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। স্পটে কাউকে পাইনি বলে কাউকে জরিমানা করা যায়নি।
“সরকার পলিথিনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সে অনুযায়ী নিষিদ্ধ পলিথিন এর উৎপাদন বন্ধ করতে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি।”
পরিবেশ অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোরর্সমেন্টের পরিচালক মাসুদ হাসান পাটোয়ারী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে আইন করে সাধারণ পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা হয় সেই ২০০২ সালে। কিন্তু সে আইন কার্যকর করতে না পারায় পলিথিনের অতি ব্যবহার পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পলিথিনের শপিং ব্যাগ পচনশীল নয়। পলিথিনের স্তূপ নালায় আটকে থাকায় পানি নিষ্কাষণেও বাধা তৈরি হয়। সে কারণে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা এক সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
গত ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা পলিথিন নিষিদ্ধের আইনের কঠোরভাবে প্রয়োগের ঘোষণা দেন। এর অংশ হিসেবে গত ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে এই ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। আর ১ থেকে কাঁচা বাজারেও পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিনের ব্যাগ (টিস্যু ব্যাগ) ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়।
সেদিন থেকেই বিভিন্ন বাজারে পলিথিনের পাইকারি বিক্রি বন্ধের জন্য অভিযান চালানো শুরু করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এখন পলিথিনের কারখানাতেও অভিযান শুরু হল।
পুরনো খবর