“বৈষম্য দূর করার জন্য আন্দোলন করেছিলাম, বৈষম্য সৃষ্টির করার জন্য নয়। জুলুমকে দূর করার জন্য আন্দোলন করেছিলাম, জুলুমকে স্থায়ী করার জন্য নয়,” বলেন তিনি।
Published : 07 Feb 2025, 09:15 PM
বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটালেও এখন ক্ষমতায় থাকা সরকারও ‘বৈষম্য করছে’ বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
তিনি বলেছেন, “…৫ অগাস্টের পরে আজকে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, যারা ক্ষমতাবান, তারা বৈষম্য করছে। সেই জুলুম, অত্যাচার-অবিচার, আজও ধর্ষণ, আজও বিনাবিচারে হত্যা, চাঁদাবাজি, দখলদারি। আজও সেই মানুষের অধিকার ফিরে পাচ্ছি না।”
মেহনতি মানুষ এখনও অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে দাবি করে তিনি বলেন, “বৈষম্য দূর করার জন্য আন্দোলন করেছিলাম, বৈষম্য সৃষ্টির করার জন্য আন্দোলন করি নাই। জুলুমকে দূর করার জন্য আন্দোলন করেছিলাম, জুলুমকে স্থায়ী করার জন্য নয়। দুর্নীতি দূর করার জন্য আন্দোলন করেছি, দুর্নীতিকে পোষণ করার জন্য আন্দোলন করিনি।
“গরিব-দুঃখী মেহনতি মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মরবে, না খেয়ে থাকবে, বস্ত্রহীন ক্ষুধার্ত থাকবে, এক মুঠো খাবারের জন্য কাক ও কুকুরের সঙ্গে ডাস্টবিনে লড়াই করবে এজন্য আন্দোলন করি নাই। খোলা আকাশের নিচে মানব সন্তান শুয়ে থাকবে এই দেশ দেখার জন্য আন্দোলন করি নাই।”
চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে শুক্রবার বিকালে ইসলামী আন্দোলনের এক সম্মেলনে কথা বলছিলেন ফয়জুল করীম।
জুলাই আন্দোলনের উদ্দেশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকেও চাকরির জন্য টেলিফোনের প্রয়োজন হবে, মেধার প্রয়োজন হবে না, এজন্য আন্দোলন করি নাই। জনগণের অধিকার বাস্তবায়িত হবে না, জনগণ সম্মানিত হবে না, এজন্য আন্দোলন করি নাই। চাঁদা দিতে হবে ও ঘুষ দেওয়ার পর ফাইল পাস হবে, এজন্য আমরা আন্দোলন করি নাই। বিচারকরা কারও দিকে তাকিয়ে বিচারের রায় লিখবে, এজন্য আন্দোলন করি নাই।
“আমরা আন্দোলন কেন করেছিলাম? যেন মানুষ অধিকার ফিরে পাবে, বৈষম্য থাকবে না, এজন্য। জুলুম-অত্যাচার থাকবে না। যেন মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়। কামার মজদুর চাষা মেথর যত জাতের মানুষ দেশে বাস করে, সবার অধিকার সমান। সব শ্রেণি, সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছিলাম।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেক মানুষের মর্যাদা থাকবে আমরা এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই। যতদিন পর্যন্ত আদর্শবান নেতা বাংলাদেশের নেতৃত্ব না দেবে, ততদিন মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিশ্বাস করে শুধু দেশ, দল ও নেতা পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের শান্তি আসতে পারে না, মানুষ মুক্তি পেতে পারে না।”
আওয়ামী লীগের সময়ে লুটপাটের অভিযোগ তুলে ফয়জুল করীম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থ মাত্র কয়েকটি পরিবারের কাছে, বিগত সরকারের আমলে ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। অথচ একবছরে দেশের বাজেটের বাজেট হয় ৭ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশের প্রতিটা নাগরিকের মাথার ওপর ব্যাপক ঋণ।
“লুটপাটের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিল তারা (আওয়ামী লীগ)। আমরা রাষ্ট্র গড়তে চাই যেখানে মানুষ শান্তিতে থাকবে, গরিব থাকবে না, যেখানে মেধার ভিত্তিতে চাকরি হবে। কোনো জায়গায় বৈষম্য থাকবে না। আমরা এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই যেখানে চুরি-ডাকাতি হবে না। মানুষ নিরাপদে থাকবে।”