শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, “হামিদের বড় গুণ হলো, সে থামেনি। ক্লান্তিহীনভাবে শিল্পের নানা ধারায় কাজ করে চলেছে।”
Published : 01 Feb 2025, 11:07 AM
ঢাকার বেঙ্গল শিল্পালয়ের কামরুল হাসান প্রদর্শনশালায় শুরু হয়েছে দেশের অগ্রগণ্য শিল্পী হামিদুজ্জামান খানের শিল্পকর্মের একক প্রদর্শনী।
বেঙ্গল আর্টস প্রোগ্রাম-নিবেদিত এই প্রদর্শনীতে শিল্পীর সাম্প্রতিককালের নিরীক্ষাধর্মী কাজ উপস্থাপন করা হয়েছে, যা চিন্তার খোরাক জোগাবে বলে আয়োজক মনে করছেন।
এই প্রদর্শনী হামিদুজ্জামান খানের নিরলস শিল্পযাত্রা ও পরিণত নান্দনিক ভাষা তুলে ধরতে প্রয়াসী, যা দৃশ্যশিল্পের ভুবনকে নতুন অন্বেষায় ঋদ্ধ করবে বলে জানায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, “প্রকৃতিই প্রকৃত শিক্ষক, আমরা কেউই প্রকৃতির বাইরে যেতে পারি না। হামিদের বড় গুণ হলো, সে থামেনি। ক্লান্তিহীনভাবে শিল্পের নানা ধারায় কাজ করে চলেছে।”
হামিদুজ্জামান খানের সঙ্গে কাটানো নানা স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “হামিদ আমার চেয়ে ছোট। তবে আমরা একসঙ্গে অনেক ছবি এঁকেছি। রায়েরবাজার গিয়ে আমরা ছবি আঁকতাম, আমাদের সঙ্গে সামাদও ছিল। সামাদকে সবাই টেলি সামাদ হিসেবে চেনেন, নাট্যজগতে তার নামডাক তৈরি হয়েছে।”
শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, “স্কাল্পচার একটি লিভিং এভিডেন্স। এই কাজ বহুবছর সবার সামনে থাকে। ভালো খারাপ মতামতের সম্মুখিন হয়। তাই সবাই এখানে কাজ করতে পারে না। কিন্তু হামিদুজ্জামান নিষ্ঠার সাথে বহু বছর ধরে এই মাধ্যমে নিজের মুন্সিয়ানার ছাপ রেখে যাচ্ছেন। একই সাথে অন্যান্য মাধমেও শিল্পী কাজ করে গেছেন, এর মুলে ছিল নিজের সৃজনসত্তার প্রতি বিশ্বস্ততা। আমি মনে করি তিনি একজন সৎ আর্টিস্ট। আজকের দিনে এরকম প্রতিভা বিরল।”
প্রদর্শনীর কিউরেটর শিল্পী মোস্তফা জামান বলেন, “স্যারের সাথে আমি অনেকদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছি। বস্তুর রুপ এবং গুণ নিয়ে কাজ করেন হামিদুজ্জামান স্যার। উনার যে নিজস্ব ধরন, বস্তুর আকার রুপান্তর করার যে প্রক্রিয়া, তা প্রশংসনীয়।
“বহু বছরের অভিজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ এই প্রদর্শনী। কিউরেট করতে গিয়ে আমি চেষ্টা করেছি স্যারের সৃষ্টিভাবনা ও এত বছরের পথচলা তুলে ধরতে এই প্রদর্শনী।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থপতি মুস্তাফা খালিদ পলাশ বলেন, “স্যারের সহজসরল কাজ আমাদের প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে, ভাবতে শেখায়। এই প্রদর্শনীতেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। নতুন জেনারেশন এসব কাজ দেখবে, নিজেদের শেকড়ের সন্ধান করবে এটাই আমার প্রত্যাশা।”
সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিল্পী হামিদুজ্জামান খান বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে আধুনিক নিরীক্ষামূলক শিল্পকর্ম নিজে কাজ করে যাচ্ছি বহু বছর ধরে। এই পথচলা সবসময় মসৃণ ছিলনা, তবে সাথে পেয়েছি অনেককেই, তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।”
এই প্রদর্শনী চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত। রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে।